মোটরসাইকেল রাইডিং-এর নেশা পুরো পৃথিবীর রাইডারদের সর্বজনীন এক ভালোবাসার নাম। হাইওয়ে দিয়ে, শহর ছাড়িয়ে, দূর দূরান্তে বাইক নিয়ে ছুটে চলার আনন্দই অন্যরকম। অনেক দিন পর বন্ধুদের নিয়ে প্ল্যান করে, অথবা অনেকে একাই মোটরসাইকেল নিয়ে লং ট্যুরে রওনা হয়ে পড়েন। প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়ার এমন সুযোগ নিশ্চয়ই আপনারও উপভোগ করতে ইচ্ছা করে! প্রথমবারের মত বাইক নিয়ে লং ট্যুর কীভাবে সামাল দিবেন তা নিয়ে চিন্তায় আছেন? বিশেষ করে বলতে গেলে আমাদের প্রধান উৎসব দুই ঈদে অনেক রাইডার বাইকে করে কর্মস্থল থেকে নিজের বাসা অথবা বাসা থেকে ছুটিতে ঘুরতে বের হন। ঈদে সবার ইচ্ছা থাকে পরিবারের সাথে সময় কাটানোর পাশাপাশি ২-১ দিনের একটা বাইক ট্যুর দেয়া। আনন্দের সময় যেন আপনার ছোট কোন অবহেলায় নিজের ভ্রমণ ক্ষতিগ্রস্থ না হয় তাই আজকের লিখা আপনার জন্য। ঈদে বাইক চালিয়ে লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে প্রিয় ঘরে ফিরতে কী করণীয়? লম্বা ট্যুর দিতে বাইকের কি কি সার্ভিস করানো উচিত? বাইক ট্যুরের আগে কি ইঞ্জিন ওয়েল বদলাতে হবে? কত কিলো চালানোর পর বাইকের টায়ার বদলাতে হয়? বাইক ভ্রমণের সময় যা যা মাথায় রাখা উচিত।
বাস্তবসম্মত ট্যুর প্ল্যান, ভ্রমণে করণীয়
বাইকে করে লম্বা ট্যুর দেয়ার জন্য প্রস্তুতিও সেই পরিমাণই লাগে। শুরুতেই আপনার কাজ হচ্ছে, আপনি কোথায় যাচ্ছেন, সেই অনুযায়ী দিনে কতটুকু পথ পাড়ি দিতে হবে, মাইলেজের হিসাব, কতবার, কোথায় থামতে হবে, কোথায় রাত কাটাবেন, খাবেন, গ্যাস ভরবেন এ সবকিছুর একটা বিস্তারিত প্ল্যান রেডি করে ফেলা।
আবার এটাও মনে রাখতে হবে যে আপনার প্ল্যানমতো সবকিছু একই রকম হবে না। আবহাওয়া, ট্র্যাফিক সমস্যা কিংবা কোনো জরুরি অবস্থার কারণে অনেক পাকা রাইডারদের নির্ভুল প্ল্যানেও কিছু না কিছু পরিবর্তন আসে। তাই কোন পরিস্থিতে কীভাবে আপনার প্ল্যান বদলাতে হবে, সেটা জানাও জরুরি। রেস্টুরেন্ট, হোটেল, গ্যাস স্টেশন ইত্যাদির কাছাকাছি কি বিকল্প আছে, তা জেনে রাখুন।
অন্য রাইডারদের সাথে বের হলে তাদের সাথে যেকোন জরুরী অবস্থায় পরামর্শ করে চলতে হবে। দিনশেষে বিশ্রাম নেয়ার সময় পরের দিনের মাইলেজ ও গ্যাস স্টেশন ইত্যাদি বিস্তারিত প্ল্যান তৈরি করে নেয়া উচিত।
বাইক সার্ভিসিং করানো জরুরি
লং রাইডে যাওয়ার আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ মেকানিক দিয়ে বাইক সার্ভিসিং করিয়ে নিতে হবে। নিরাপত্তা নির্ভর করবে বাইক সার্ভিসিং করার ওপরে। দীর্ঘ একটি বাইক জার্নিতে হঠাৎ আপনার বাইকের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে, তেল শেষ হয়ে যেতে পারে, স্পার্ক প্লাগ কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে কিংবা টায়ার পাংচার হতে পারে।
এ রকম নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন রাস্তার মধ্যে। বাইকে আগে থেকে সমস্যা থাকলে লং রাইডে যাওয়ার সময় এ রকম বিপদে পড়তে হয়। বাইকের প্রতিটি অটো পার্টস সচল আছে কি না তা লং রাইডে যাবার আগে পরীক্ষা করা উচিত। এতে আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
সঠিক পোশাক ও এক্সেসরিজ দূরপথে রাইডিং এর জন্য সবসময় চেষ্টা করুন রাইডিং প্যান্ট, গোড়ালি পর্যন্ত লম্বা বুট জুতা, রাইডিং জ্যাকেট এবং অবশ্যই একটি সম্পূর্ণ মুখ ঢাকা হেলমেট পরতে। অথবা সাধারণ পোশাকের সাথে কনুই ও হাটুর গার্ড, বডি আর্মর বা বর্ম পড়েও চালানো যায়। অনলাইনে কিংবা মোটরবাইক এক্সেসরিজের দোকানে এগুলো পেয়ে যাবেন। বাইক চালানোর জন্য কিছুটা আঁটসাঁট বা ফিটিং পোশাক হলে সুবিধা হয়। এইসব পোশাক ও এক্সেসরিজ আপনাকে যেমন নিরাপদ রাখবে, তেমনি একজন আত্মবিশ্বাসী বাইকারের মতো ফীল নিতে পারবেন। Tushar Bhaiii প্রয়োজনীয় জিনিসসহ হালকা প্যাকিং করুন মোটরসাইকেলের জন্য বিশেষ ধরণের লাগেজ, বা ব্যাগ পাওয়া যায়, সেগুলো অনলাইনে বা এক্সেসরিজ শপ থেকে কিনে নিতে পারেন। তবে প্যাকিং করার সময় যেটা মাথায় রাখবেন, তা হলো যত অল্প জিনিস নেয়া যায়। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় জিনিস ও অল্প কাপড় সাথে নিন। এছাড়াও মিনিপ্যাক জাতীয় ছোট প্যাকেজিং এর জিনিস ব্যবহার করার চেষ্টা করুন, যাতে সেগুলো ব্যবহার শেষে ফেলে দিয়ে ব্যাগ হালকা করা যায়। কাপড় ভাঁজ না করে রোল করে নিন; এতে জায়গা কম লাগে আবার সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। প্রয়োজনীয় ও বেসিক কিছু ঔষধ নিতে ভুলবেন না।
বিশ্রাম নিন, পর্যাপ্ত পানি পান করুন লম্বা ট্যুরের সময় পানিশূন্যতা অনেক ভয়াবহ সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। প্যাকিং করার সময় সাথে ভালো পানির বোতল বা ফ্লাস্ক নিতে ভুলবেন না যেনো। ২ লিটারের বোতল একদিনের রাইডের জন্য যথেষ্ট। কোথাও থামলে সেই বোতল মনে করে রিফিল করে নিতে হবে। ওয়াশরুম ব্যবহারের ভয়ে অনেক লম্বা সময় ধরে পানি না খেয়ে বাইক চালাতে থাকলে পানিশূন্যতায় আপনি সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। তাই যেকোন জায়গায় থামলে ওয়াশরুম ব্যবহারের পর বেশি করে পানি পান করুন, পিপাসা লাগুক আর না লাগুক। পানির সাথে গ্লুকোজ মিশিয়ে নিলে আরো ভালো ফল পাবেন। যাত্রাপথ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন ট্যুর প্ল্যান করার সময় কোন পথে যাওয়া ভালো হবে ও সময় বাঁচবে, সেসব নিয়ে ভালোভাবে পড়াশুনা করে নিন। নেটওয়ার্ক সব জায়গায় একই রকম থাকে না; তাই গুগল ম্যাপসে আপনার যাত্রাপথ অফলাইনে সেভ করে রাখুন। পথে কোথাও থামলে, স্থানীয়দের কাছ থেকে সামনের পথ সম্পর্কে ভালোভাবে জিজ্ঞেস করে নিন। তারা আরো ভালো ও নিরাপদ পথ চিনিয়ে দিতে পারবে। বাংলাদেশের মানুষ এই ব্যাপারে অনেক আন্তরিক, তাই লজ্জার কোন কারণ নেই।
নিয়মিতবিরতি নিন আপনার বাইক এবং শরীর দু’টোরই বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। তাই নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর ভালো জায়গা থেকে বিরতি নেয়ার চেষ্টা করুন। মোটরসাইকেলের চাকা ও ইঞ্জিন অয়েল এসব টুকিটাকি অটো পার্টস চেক করে নিন। পানি ও হালকা নাস্তা খেয়ে নিন। তবে বারবার থামতে গেলে যাত্রাপথে অনেক সময় নষ্ট হবে, আর গন্ত্যবে সময়মত পৌঁছাতে কষ্ট হবে। তাই চিন্তা ভাবনা করে পদক্ষেপ নিন; গ্রুপের সাথে থাকলে এই ব্যাপারটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
যেকোন ধরণের আবহাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন মোটরসাইকেলে লম্বা ট্যুর দেয়ার সময়, আবহাওয়া একেক জায়গায় একেক রকম হতে পারে। এই মৌসুমে যেকোনো সময় বৃষ্টির জন্য প্রস্তুত থাকুন; বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায়। বৃষ্টির সময় মোটরসাইকেল চালানোর ব্যাপারে পড়াশুনা করে নিন। রওনা হওয়ার আগেই রেইনকোট ও এক্সেসরিজ পরীক্ষা করে নিন।
উৎসাহ হারাবেন না মোটরসাইকেল চালানোর দারুণ একটা দিক হচ্ছে- একবার এটা উপভোগ করা শুরু করলে, আপনি আর বোর হবেন না। পথে ছোট, বড় বিভিন্ন সমস্যা আসতে পারে; যেকোনো পরিস্থিতিতে মোটিভেশন ধরে রাখুন। ভয় পেলে বা বেশি দুশ্চিন্তা করলে, সমস্যা সমাধান তো হবেই না, বরং আরো সময় নষ্ট হবে। মোটরসাইকেল ট্যুরে সবাই কম বেশি ভুল করেন, তাই হতাশ হওয়ার কোন কারন নেই। এর থেকে আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলি আরো বড় হবে, ও পরবর্তীতে নতুন রাইডারদের আপনিই সাহায্য করতে পারবেন।
জরুরীপ্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও বাড়তি পার্টস সাথে রাখুন ট্যুরে যাওয়ার আগে একজন দক্ষ মেকানিক দিয়ে আপনার বাইক সার্ভিসিং করানোর সময় তার কাছ থেকে জেনে নিন কী কী সরঞ্জাম ট্যুরে আপনার সাথে নেয়া দরকার হবে। সেই অনুযায়ী প্যাকিং করুন। প্রত্যেকটি বাইকের চাহিদা আলাদা। তবে সাধারণভাবে যেইসব জিনিস সবারই লাগে, সেগুলো হচ্ছেঃ বাড়তি টিউব, স্পার্ক প্লাগ, ব্রেক ও এক্সেলেটরের তার, ইঞ্জিন অয়েল ইত্যাদি।
রিফ্লেক্টর পরুন
বাইকের আরোহী ও চালক উভয়ই রিফ্লেক্ট জ্যাকেট পরুন। এতে করে দূর থেকে আপনি দৃশ্যমান থাকবেন। বিপদ এড়াতে পারবেন।
টুকিটাকি জিনিস
মানিব্যাগ, ফোন পকেটে না রেখে ওয়েস্টব্যাগে ভরে নিন। আপনার মালপত্র পেছনের কেরিয়ারে শক্ত করে বাঁধুন। পিঠে কোনো ভাবেই ব্যাগ নেয়া যাবে না। সঙ্গে নিন পানির বোতল, স্যালাইন, ব্যথা নাশক ওষুধ, স্যাভলন, গজ ইত্যাদি। বিপদের সময় এগুলো কাজে দেবে।
এছাড়াও এক সেট টিউব, প্লাগ, ব্রেক এবং ক্লাচের তার নিন। শীতের রেশ এখনো কাটেনি। সঙ্গে ওভার কোট নিন।
সতর্কতা
বাইক ভ্রমণকালে নির্জন জায়গায় বিরতি দেবেন না। এতে আপনি ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে পারেন। জনবহুল বাজারে বিরতি নিন। বাইক থেকে দূরে যাবে না। প্রাকৃতিক কাজ সারার প্রয়োজন পরলে হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে বাইক রেখে কাজ সারুন। কিংবা পাবলিক টয়লেটও ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে বাইকের দিকে নজর রাখুন। পথে কোনো খাবার কিনবেন না, খাবেনও না। এতে আপনি অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরতে পারেন। যা কেনার ভ্রমণ শুরুর আগে আপনার মহল্লার পরিচিত দোকান থেকে কিনুন।
পুলিশ কিংবা আইন শৃ্ঙ্খলা বাহিনীর পোষাক ছাড়া কেউ সিগনাল দিলে বাইক নিয়ে দাঁড়াবেন না।। Tushar Bhaii
প্রিয় বাইকের যত্ন নেবেন যেভাবে
প্রতিদিনের যত্ন প্রতিবার রাইড শুরুর আগে আপনার পুরো বাইকটি একবার পরখ করতে সময় লাগে এক মিনিট। সামান্য এই সময়ই বাঁচাতে পারে আপনার মূল্যবান জীবন। এ সময় বাইকে কোনো অস্বাভাবিক বিষয় আছে কি না খেয়াল করুন; যেমন—টায়ার প্রেসার, টায়ারের খাঁজ, চেইন, অয়েল লেভেল, ব্রেক প্যাড, ফিল্টার, ব্যাটারি পরীক্ষা করে নিন। মোটরসাইকেল চালানোর সময় আওয়াজ কেমন শোনাচ্ছে খেয়াল করুন। অস্বাভাবিক শব্দ হলে নিরাপদ স্থানে থামিয়ে পরখ করে নিন। রাইড শেষে কর্মস্থলে বা বাসায় বাইক ঢেকে রাখতে হবে। দিনের বেলা ছায়াযুক্ত স্থানে বাইক রাখতে হবে। রোদ ও ধুলা-ময়লায় বাইকের যন্ত্রাংশ নষ্ট হতে পারে।
সাপ্তাহিক যত্ন ব্যস্ততার কারণে হয়তো অনেকে প্রতিদিনের রুটিন চেকআপ ভালোমতো করতে পারেন না। তাঁরা সপ্তাহের ছুটির দিনটা বেছে নিতে পারেন। সপ্তাহে একবার ভালোভাবে পুরো বাইকটি পরিষ্কার করে নিতে ভুলবেন না। ধুলা-ময়লা, কাদা লেগে থাকলে সাবান-পানি দিয়ে পুরো বাইকটি ধুয়ে নিতে পারেন।
মাসিক চেকআপ মাসে একবার বাইকের কিছু যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করে দেখা জরুরি। ব্রেক, ক্লাচ, কুল্যান্ট, অয়েল লেভেল যাচাই করে দেখুন। ম্যানুয়াল দেখে যদি নিজেই করতে পারেন তো ভালো। না হলে একজন দক্ষ মেকানিকের সাহায্য নিতে পারেন। পাঁচ হাজার মাইল অতিক্রম করার পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করুন। ব্রেক প্যাড পাতলা হলে বদলে ফেলুন। পেছনের স্ট্যান্ড উঠিয়ে চেইন পরীক্ষা ও পরিষ্কার করতে পারেন। সব ধরনের তার, নাট-বল্টু, স্ক্রু খেয়াল করুন। তার ছিঁড়ে, ফেটে বা বের হয়ে গেলে ঠিক করে নিন। নাট-বল্টু ঢিলা হলে টাইট করে দিতে হবে। বাইকের সংযোগস্থল বা বিয়ারিংগুলোতে লুব্রিক্যান্ট দিয়ে দিন।
মোটরবাইক ভালো রাখতে নিয়মিত সার্ভিসিং করাতে হবে। কেননা বাইক চালাতে চালাতে কিছু যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে যায়। নিজে না বুঝলে একজন দক্ষ মেকানিক দেখালে বাইকের সমস্যাগুলো সহজেই ধরা পড়ে। যন্ত্রাংশের ত্রুটি নিয়ে বাইক চালানো উচিত নয়। এতে দুর্ঘটনা ঘটার এবং বাইক নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই বাইক ভালো রাখার জন্য নিয়মিত সার্ভিসিং করানো দরকার।
Tushar Bhaiii
ঈদের ছুটিতে রাস্তায় বাইক নিয়ে চলাচলে রইল কিছু টিপস—
কয়েকদিন পরই ঈদুল ফিতর। অনেকেই ছুটছেন বাড়ির দিকে। অনেকের মোটরসাইকেল তথা বাইক রয়েছে। তারা ঈদে বাইক নিয়ে বাড়ি যাওয়ার কিংবা কোথাও ভ্রমণের কথা চিন্তা করছেন, আপনাদের কিছু বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত। তাই ঈদের ছুটিতে রাস্তায় বাইক নিয়ে চলাচলে রইল কিছু টিপস—
১. অতিরিক্ত গতিতে বড় গাড়ি ওভারটেক করবেন না। ২. সবাই তাড়াহুড়ার মাঝে থাকবে সুতরাং সচেতন থাকবেন। ৩. ওভারটেক করার সময় হর্ন বা সিগন্যাল দিন। ৪. ড্রাইভার বা হেলপার সিগন্যাল দেওয়ার পর ওভারটেক করুন। ৫. বড় গাড়ির একদম পেছনে থাকবেন না। এতে চালক বা হেলপার আপনাকে দেখতে পান না। ৬. হুট করে ডানে-বামে যাবেন না। নির্দিষ্ট লেনে বাইক চালান। ৭. দাঁড়ানো বড় গাড়ির একদম পেছনে দাঁড়াবেন না। ৮. বড় গাড়ি সামনে যাওয়ার সময় পেছনে যায়। সুতরাং একটু জায়গা নিয়ে দাঁড়াবেন। ৯. অতিরিক্ত ব্যাগ বহন করবেন না। এতে ব্যালেন্স হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ১০. সব সময় চেষ্টা করবেন নিজের কাঁধ ফ্রি রেখে বাইক চালাতে। ১১. দূরের রাস্তায় যাওয়ার আগে অবশ্যই বাইক ভালো করে চেকআপ করে নেবেন। ১২. সব সময় মাথা ঠান্ডা রেখে বাইক চালাবেন। ১৩. বাইক চালানো অবস্থায় মোবাইল ফোনে কথা বলবেন না। ১৪. অবশ্যই মাথায় হেলমেট ব্যবহার করতে হবে। ১৫. বাইক চালানোর সময় বাইক আরোহী ফুল পিপিই পরা থাকবেন। ১৬. ঘুম ঘুম চোখে বাইক চালানো ঠিক হবে না।
FAQs
একটা মোটরসাইকেল দিনে কতটা পথ যেতে পারে? একজন অভিজ্ঞ রাইডার এক দিনে বাইকে করে গড়ে প্রায় ৩০০ মাইল পর্যন্ত পথ পাড়ি দিতে পারেন। এর মধ্যে অবশ্য বেশ কয়েকবার থামা, বিশ্রাম নেয়া, খাওয়া দাওয়া, রিফিল করা ইত্যাদির প্রয়োজন পড়ে। আপনার মোটরসাইকেলের স্বাস্থ্য বুঝে আপনার টার্গেট নির্ধারণ করুন।
ট্যুরের উপযোগী মোটরবাইক কীভাবে চিনবো?
বেশিরভাগ ট্যুরিং মোটরসাইকেলে বড় সাইজের ডিসপ্লেসমেন্ট ফেয়ারিং এবং উইন্ডশীল্ড থাকে। রুক্ষ আবহাওয়া ও তীব্র বাতাসের ঝাপটা থেকে নিরাপদ থাকার জন্য এগুলো বেশ কার্যকর। জ্বালানী ট্যাংক বেশ বড় হয়, ফলে দুই রিফিলের মাঝে আরো লম্বা পথ পাড়ি দেয়া যায়। এদের ইঞ্জিনে থাকে বেশ ভালো মানের লো-এন্ড হর্সপাওয়ার। আর ট্যুরিং বাইকের সিটগুলো বেশ আরামদায়ক হয়, এবং তাতে পিঠ ও কোমর সোজা রেখে বসার ব্যবস্থা থাকে।
লং ট্যুরের জন্য কোন মোটরবাইকটি ভালো?
বাংলাদেশে লং ট্যুরের উপযোগী ৫টি অন্যতম সেরা বাইক হচ্ছেঃ
ইয়ামাহা এফজেডএস এফআই ভি৩
লিফান কেপিটি ১৫০
সুজুকি ইনট্রুডার এবিএস
বাজাজ পালসার এনএস ১৬০
হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর
লং ট্যুরে যাওয়ার আগে বাইকের কী কী চেক করবো?
আমেরিকার ‘মোটরসাইকেল সেফটি ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠানটির মতে, যেকোন লং ট্যুরের আগে মোটরবাইকের ৬টি জিনিস খুব ভালোভাবে পরীক্ষা করে নেয়া জরুরিঃ
টায়ার
কন্ট্রোল সিস্টেম
যাবতীয় লাইট ও ইলেকট্রিকাল সামগ্রী
ইঞ্জিন অয়েল ও সকল বাইক ফ্লুইড
চ্যাসিস, অর্থাৎ মোটরসাইকেলের কাঠামো
স্ট্যান্ড
ট্যুরিং মোটরসাইকেলগুলো ভারী হয় কেন?
একটি ভালো মানের ট্যুরিং মোটরসাইকেলের ওজন গড়ে প্রায় ৪০০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। বড় উইন্ডশীল্ড, জ্বালানী ট্যাংক, বাইকারের লাগেজ, মেইন্টেইনেন্সের সরঞ্জাম এই সবকিছুর জন্যই ট্যুরিং মোটরসাইকেলের ওজন এত বেশি হয়। এই কারণে বাইকের উপর চাপ কমানোর জন্য আমরা রাইডারদের হালকা প্যাকিং করার পরামর্শ দিয়ে থাকি।
Comments