ইঞ্জিন ওয়েল: মোটরসাইকেলের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান | ইঞ্জিন অয়েল কত দিন পর পর পরিবর্তন করতে হয়?
Updated at : 3 weeks ago
একটি ইঞ্জিন চালানোর জন্য যেমন জ্বালানির প্রয়োজন হয়, তেমনি ইঞ্জিনের অভ্যন্তরের ছোট ছোট অংশগুলোর সঠিক কার্যকারিতা বজায় রাখতে ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে ইঞ্জিন ওয়েল সাধারণত 'মবিল' নামে বেশি পরিচিত, যদিও এটি একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের নাম। কেউ কেউ একে ইঞ্জিন লুব্রিকেন্টও বলে থাকে।
ইঞ্জিন ওয়েল কী? ইঞ্জিন ওয়েল মূলত একটি লুব্রিকেন্ট যা ইঞ্জিনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন অংশকে চলাচলে সহায়তা করে। ইঞ্জিন চালানোর সময় এর অভ্যন্তরের যন্ত্রাংশগুলোর মধ্যে ঘর্ষণ সৃষ্টি হয়, যা অতিরিক্ত গরম হয়ে ক্ষতির কারণ হতে পারে। ইঞ্জিন ওয়েল এই ঘর্ষণ কমিয়ে ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং তাপ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা অনেকাংশেই ইঞ্জিন ওয়েলের ওপর নির্ভরশীল, তাই নির্দিষ্ট সময় পরপর ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তন করা গুরুত্বপূর্ণ।
For any Original engine oil in Bangladesh, call us@ 01896108915 For Genuine spare parts for your bikes, visit us
ইঞ্জিন ওয়েলের প্রকারভেদ - বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও গ্রেডের ইঞ্জিন ওয়েল পাওয়া যায়। সাধারণত ইঞ্জিন ওয়েল তিনটি প্রধান শ্রেণিতে বিভক্ত: ১. মিনারেল ইঞ্জিন ওয়েল এই ওয়েলটি খনিজ তেল থেকে পরিশোধিত হয়ে তৈরি হয়। এটি মূলত ভূ-গর্ভস্থ পেট্রোলিয়াম থেকে আহরণ করা হয় এবং পরিশোধনের মাধ্যমে ক্ষতিকারক উপাদান সরিয়ে ফেলা হয়। বেশিরভাগ মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক মিনারেল ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে এটি দ্রুত পরিবর্তন করতে হয় এবং এটি ইঞ্জিনের জ্বালানি চাহিদা কিছুটা বাড়িয়ে দিতে পারে।
২. সিনথেটিক ইঞ্জিন ওয়েল এই ওয়েলটি পরীক্ষাগারে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয় এবং এতে উচ্চমানের যৌগিক উপাদান থাকে। এটি ইঞ্জিনের শক্তি বৃদ্ধি করে এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। সিনথেটিক ইঞ্জিন ওয়েল তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল হলেও এটি ইঞ্জিনের জন্য বেশি কার্যকর।
৩. সেমি-সিনথেটিক ইঞ্জিন ওয়েল মিনারেল ও সিনথেটিক ইঞ্জিন ওয়েলের মিশ্রণে তৈরি হয় সেমি-সিনথেটিক ইঞ্জিন ওয়েল। এটি মিনারেলের তুলনায় উন্নতমানের এবং কম ব্যয়বহুল হলেও সিনথেটিকের মতো দীর্ঘস্থায়ী নয়।
ইঞ্জিন ওয়েলের গ্রেড মোটরসাইকেল ইঞ্জিন ওয়েল বিভিন্ন গ্রেডে পাওয়া যায়, যেমন 5W-40, 10W-40, 10W-30, 20W-50 ইত্যাদি। প্রতিটি মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক নির্দিষ্ট গ্রেডের ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহারের পরামর্শ দেয়, যা ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা ও স্থায়িত্ব বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার না করলে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হতে পারে এবং এর কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। বিখ্যাত ইঞ্জিন ওয়েল ব্র্যান্ডসমূহ বাজারে Shell, Mobil, Yamalube, Repsol Moto Sintetico, Motul, Castrol, Total, Liqui Moly সহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন ওয়েল পাওয়া যায়। মোটরসাইকেলের জন্য নির্ধারিত গ্রেড অনুযায়ী যে কোনো মানসম্পন্ন ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, একই ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন ওয়েল দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করাই ভালো। বর্তমানে কিছু মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন ওয়েল বাজারজাত করছে।
For any Original engine oil in Bangladesh, call us@ 01896108915 For Genuine spare parts for your bikes, visit us
ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তনের সময়কাল - মিনারেল ইঞ্জিন ওয়েল: ৮০০-১০০০ কিলোমিটার পর পরিবর্তন করা উচিত। - সেমি-সিনথেটিক ইঞ্জিন ওয়েল: মিনারেলের তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী এবং বেশি কিলোমিটার চলতে সক্ষম। - সিনথেটিক ইঞ্জিন ওয়েল: দীর্ঘস্থায়ী এবং বেশি দূরত্ব চালানোর জন্য উপযোগী।
ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ✅ সব সময় মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারকের নির্ধারিত গ্রেডের ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করুন। ✅ কখনোই মিনারেল ওয়েলের সাথে সিনথেটিক বা সেমি-সিনথেটিক ওয়েল মেশাবেন না। ✅ ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তনের সময় **ওয়েল ফিল্টার**ও পরিবর্তন করা ভালো। ✅ ইঞ্জিন ওয়েল নিয়মিত পরিবর্তন করলে ইঞ্জিন দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ভালো পারফরম্যান্স প্রদান করে।
সঠিক ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করলে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের স্থায়িত্ব ও পারফরম্যান্স উন্নত হয়। তাই নির্দিষ্ট সময় পরপর ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তন করা ও মানসম্পন্ন ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তনের সময়: মিনারেল বেসড ইঞ্জিন অয়েল: প্রতি ২০০০-২৫০০ কিলোমিটার অন্তর বদলানো উচিত। সেমি-সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল: প্রতি ৩০০০-৪০০০ কিলোমিটার অন্তর পরিবর্তন করা ভালো। সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল: প্রতি ৫,০০০-৭,০০০ কিলোমিটার অন্তর পরিবর্তন করা ভালো।
বাইকের ধরন অনুযায়ী মবিলের (ইঞ্জিন অয়েল) পরিমাণ ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণভাবে, ১৫০ সিসি বাইকে ১ লিটারের চেয়ে কম, এবং ২৫০ সিসির বাইকে ১ লিটার বা তার চেয়ে বেশি মবিল লাগে। ছোট বাইক (১৫০ সিসি বা তার কম): সাধারণত, ১৫০ সিসি বা তার কম সিসির বাইকে ১ লিটারের চেয়ে কম মবিল লাগে। মাঝারি বাইক (২৫০ সিসি বা তার বেশি): ২৫০ সিসি বা তার বেশি সিসির বাইকে ১ লিটার বা তার চেয়ে বেশি মবিল লাগে। স্পেসিফিক মডেল: বিভিন্ন বাইকের মডেলে মবিলের পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে। তাই, আপনার বাইকের ম্যানুয়াল দেখে সঠিক পরিমাণ মবিল ব্যবহার করা উচিত।
উদাহরণ: Apache RTR 4V বাইকে 10w30 গ্রেডের ১২০০ মিলি ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতে হয়। কিছু বাইকে ১ লিটার মবিল লাগে, আবার কিছুতে ১ লিটার থেকে ২০০ মিলি বেশি লাগে।
For any Original engine oil in Bangladesh, call us@ 01896108915 For Genuine spare parts for your bikes, visit us
মোটরবাইকের জন্য ৫ টি সেরা ইঞ্জিন অয়েল ব্র্যান্ড i. Motul (মটুল) ii. Castrol (ক্যাস্ট্রল) iii. MOBIL (মবিল) iv. Shell (শেল) v. Liqui Moly (লিকুই মলি)
নকল ইঞ্জিন অয়েল চেনার ১০ টি উপায় আসল ইঞ্জিন তেল সর্বদা স্বচ্ছ এবং অমেধ্যমুক্ত থাকে । ইঞ্জিন তেল উৎপাদনে যেকোনো অমেধ্যের পণ্য পরিশোধন করার জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়া জড়িত। অমেধ্য বা ময়লার উপস্থিতি ইঙ্গিত দিতে পারে যে আপনার কাছে একটি নকল পণ্য রয়েছে। ইঞ্জিন তেলের রঙ এক পণ্য থেকে অন্য পণ্যে ভিন্ন হতে পারে।
ইঞ্জিন অয়েলের অরিজিনালিটি যাচাই করে নিন
ভেজাল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহারে মাইলেজ কমে যায়
নকল তেল ব্যবহারে ইঞ্জিন অতিরিক্ত ফুয়েল খরচ করে
ভেজাল তেল ব্যবহারে ইঞ্জিন থেকে শব্দ আসে
নকল ইঞ্জিন অয়েলে রং পরিবর্তন দেখা যায়
ইঞ্জিন অয়েলের গন্ধ থেকে আসল ও নকলের পার্থক্য বুঝে নিন
10w30 ইঞ্জিন অয়েল কি?
ইঞ্জিন তেলের উপর 10W30 নামকরণের অর্থ হল ইঞ্জিন ঠান্ডা হলে তেলের সান্দ্রতা 10W এবং ইঞ্জিন গরম হলে 30। এটি 5W30 লেবেলযুক্ত তেলের থেকে আলাদা, যার 5W এ ইঞ্জিন ঠান্ডা হলে পাতলা সান্দ্রতা থাকে।
10w 40 ইঞ্জিন অয়েল কি কাজে লাগে?
এই গ্রেডটি যাত্রীবাহী গাড়ি এবং হালকা বাণিজ্যিক যানবাহনে লাগানো পেট্রোল এবং ডিজেল ইঞ্জিনে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। 10W-40 উচ্চ স্তরের ইঞ্জিন পরিচ্ছন্নতা প্রদান করে এবং উচ্চ তাপমাত্রা জমা নিয়ন্ত্রণ করে, বিশেষ করে টার্বোচার্জড ইউনিটগুলিতে।
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন গরম হয় কেন?
যদি লিকের কারণে কুল্যান্টের মাত্রা কমে যায় অথবা অপর্যাপ্ত হয়, তাহলে কুলিং সিস্টেম কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে না, যার ফলে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয়ে যায় । এই অবস্থা কাটিয়ে ওঠার উপায় হল কুল্যান্টের মাত্রা পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজনে এটি যোগ করা। এর পরে, কুলিং সিস্টেমে লিক আছে কিনা পরীক্ষা করুন, যেমন লিক হোস বা রেডিয়েটর।
বাইকের ইঞ্জিনের তাপ কমানোর উপায়?
নিয়মিতভাবে কুল্যান্টের মাত্রা পরীক্ষা করুন এবং বজায় রাখুন, এবং প্রস্তুতকারকের সুপারিশ অনুসারে এটি ফ্লাশ করুন এবং প্রতিস্থাপন করুন । একটি ভাল মানের কুল্যান্ট/অ্যান্টিফ্রিজ ব্যবহার ইঞ্জিনের তাপমাত্রা কমাতেও সাহায্য করতে পারে। হোস এবং রেডিয়েটর পরীক্ষা করুন: হোস এবং রেডিয়েটর পরিদর্শন করাও আপনার রক্ষণাবেক্ষণের রুটিনের অংশ হওয়া উচিত।
Comments